নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ছেড়েছেন অধিকাংশ বাসিন্দা। নাড়ির টানে ট্রেন ও বাসে করে ফিরেছেন তারা। বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকা ছাড়ায় এখন প্রায় ফাঁকা ব্যস্ততম এই নগরী।
এদিকে ফাঁকা ঢাকায় স্বাভাবিকভাবেই চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানান অপরাধের শঙ্কা বেড়ে যায়। তবে রাজধানীবাসীর জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
অন্যদিকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি র্যাপিড় অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদে কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা নেই। তবে সবকিছু বিবেচনায় ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর সব কটি ইউনিটের বাড়তি তৎপরতা থাকছে। অপতৎপরতা ঠেকাতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পর্যাপ্ত পুলিশ মাঠে থাকবে। র্যাব-পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে গুরুত্বপূর্ণ সব এলাকায়।
ডিএমপি জানিয়েছে, ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রাজধানীতে চুরি-ছিনতাই প্রতিরোধে ডিএমপির প্রত্যেকটি থানায় মোবাইল টিম কাজ করবে। এ ছাড়া রাজধানীজুড়ে রাতের নিরাপত্তায় এলাকাভিত্তিক অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা গুলশান, বনানী ও বারিধারায় কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রবেশ এবং বাহির পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল টিম। এ ছাড়া সারাদেশে ব্যাংক বন্ধ থাকায় এটিএম বুথগুলোকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার জানিয়েছেন, যেসব পেশাদার অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা এখন কারাগারে আছেন। ঈদের আগে যেহেতু তাদের জামিনের সম্ভাবনা নেই, তাই এতোগুলো অপরাধী জেলে থাকলে, পুলিশ কর্তৃক নজরদারী সহজ হবে। আর বাইরে থেকে যাতে কেউ দুর্ঘটনা ঘাটাতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকছি।
জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। সে রকম কোনো আশঙ্কা থাকলে সিটিটিসি (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) প্রস্তুত থাকবে।
ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে তার দাবি, আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের মোবাইল টিম বাসাবাড়ির গার্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে। কোনো ধরনের সমস্যা দেখলেই তারা যেন আমাদের অবহিত করেন, তা জানানো হয়েছে।
এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে র্যাব। একইসঙ্গে ঈদে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন।
তার (খুরশীদ) ভাষ্য, ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশে র্যাব কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, মোবাইল পেট্রোল, চেকপোস্ট, সিসিটিভির মনিটরিংসহ সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরার মাধ্যমে চারদিক পর্যবেক্ষণ করা হবে।