ফরিদপুর : ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিপা দাস (৩২) নামে এক প্রসুতি অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের স্বজনেরা। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারী রাজবাড়ি জেলার পাংশা উপজেলার রামকল গ্রামের মিঠুন সরকারের স্ত্রী এবং একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েরসহকারী শিক্ষিকা। রিপা দাস ফরিদপুর টেপাখোলার অনিল কুমার দাসের মেয়ে।
রিপার ভগ্নিপতি ধীরাজ কুমার জানান, চার বছরের বিবাহিত জীবনে প্রথম সন্তান সম্ভবা হিসাবে আড়াই মসের গর্ভবতী ছিলেন। কিন্তু এরইমাঝে তার রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোববার দুপুর ২টার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকগণ তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এমআর (গর্ভপাত) করাতে বলেন।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুয়ায়ী রোববার সন্ধা ৭টার দিকে রিপাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ কানিজ ফাতেমা তার এমআর করান। পরের দিন সকাল ৭টার দিকে সেখান থেকে তাকে বের করে হাসপাতাল বেডে দেয়া হয়। এসময় রিপার প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিলো। দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের নার্স ও ইন্টার্নীদের কাছে অনুরোধ করেও তারা অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেননি। প্রায় এক ঘন্টা পর একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা হলেও এর আগেই মৃত্যুর বুকে ঢলে পড়েন তিনি। তার স্বজনেরা আজ দুপুরে রিপার মৃতহেদ নিয়ে যায় তার স্বামীর বাড়ি পাংশার রামকল গ্রামে।
এই বিষয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সকালে গাইনি বিশেষজ্ঞ কানিজ ফাতেমা বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি (কানিজ) জানান অস্ত্রপচারের পর রোগীর অবস্থা অবস্থা ভালো ছিল। তবে সকালে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটায় তিনি মারা গেছেন। তবে অক্সিজেনের অভাবে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান।
ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাংসদ খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে এসে রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না এ জাতীয় অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এই সংকটকালে চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসা বেশী। তাই তাদের (চিকিৎসক) কর্তব্যকাজে গাফিলতি দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এসব সমস্যার সমাধানে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চিকৎসকসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলকে নিয়ে জরুরী সভা আহবান করা হয়েছে।