পটুয়াখালী সংবাদদাতা : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মিমাংসা না হওয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান উজ্জল এর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত রাঙ্গাবালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান উজ্জল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। তবে শুনেছি কে বা কারা হামলা চালিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাঙ্গাবালী থানার ওসি আলী আহম্মেদ জানান, হামলার ঘটনায় মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হামলার শিকার সুবেদের পরিবারের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতা সুবেদের নেতৃত্বে ধীরেন মণ্ডল, বিশ্বজিৎ মজুমদার এবং সুদেব মণ্ডল নামে এক কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। হামলার ঘটনা থেকে রেহাই পেতে একলাখ টাকা মুক্তিপণ দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে ছাত্রলীগের কাছ থেকে প্রাণে রক্ষা পান তারা। হামলার ঘটনার পর দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
হামলার শিকার সুদেব মণ্ডল জানায়, জমি সংক্রান্ত ঘটনায় গত এক সপ্তাহ আগে সুদেব মণ্ডলের প্রতিবেশি জয়ের বাবা অমল মণ্ডলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ওই ঘটনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মীমাংসা করে দেয়া প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ঘটনায় চরমোন্তাজ পুলিশ ফাঁড়িতেও একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। ঘটনাটি মীমাংসার দিন ধার্য্য ছিল ২৪ এপ্রিল। কিন্তু অসঙ্গত কারণে মীমাংসায় বসতে পারেনি জনপ্রতিনিধিরা। ওই ঘটনার জেরে বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান তাদের পরিবারের সদস্যদের ফোনে শাসিয়ে আসছিলেন। আহতরা আরও জানান, ওই ঘটনার জেরেই রাঙ্গাবালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান উজ্জল শুক্রবার বিকালে ধীরেন মণ্ডল ও বিশ্বজিৎ মজুমদারকে চরমোন্তাজ ৭ নং ওয়ার্ডের হিন্দুপাড়ার একটি নির্জন স্থানে ডেকে নেয়। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা সঙ্গে থাকা লোকজন তাদেরকে বেধম প্রহার করেন এবং লোহার রড দিয়ে শরীরের একাধিক স্থানে আঘাত করেন। এর কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগ নেতা উজ্জল মোটরসাইকেলযোগে সুদেবের বাড়িতে হাজির হয়। পূর্বের ঘটনা মীমাংসা করার কথা বলে সুদেবকে মোটরসাইকেলে তুলে বুড়া গৌরাঙ্গ নদীর তীরের বউবাজার এলাকায় নিয়ে যায়। ছাত্রলীগ নেতা উজ্জল নিজেই সুদেবকে ব্যাপক মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুদেবকে কেটে নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়। এ সময় সুদেব ছাত্রলীগ নেতার কাছে প্রাঁণ ভিক্ষা চাইলে ছাত্রলীগ নেতা নগদ একলাখ টাকা দাবি করেন। প্রাঁণে বাচতে সুদেব তার পরিবারের কাছে ফোন করে একলাখ টাকা নিয়ে নদীর তীরে যেতে বলে।
খবর পেয়ে সুদেবের পরিবার ও প্রতিবেশীরা মিলে স্থানীয়দের সহায়তায় বুড়া গৌড়াঙ্গ নদীর তীর থেকে সুদেবসহ আহত তিনজনকে উদ্ধার করে লোকালয়ে নিয়ে আসেন। পরে আহতদের পক্ষ থেকে চরমোন্তাজ পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ততক্ষণে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।