নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নারায়ণগঞ্জের আদমজী থেকে চাষাড়া দিকে যাওয়া রেল পথটি প্রায় ৩০ বছর যাবৎ বন্ধ হয়ে আছে। তবে রাস্তাটির দুইপাশের খালি জায়গা অবৈধ্যভাবে দখল করে ভাসমান ছিন্নমূল মানুষজন দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস ও দোকানপাট করে ব্যবসা-বানিজ্য করে আসছে । সম্প্রতিককালে বাংলাদেশ সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন কল্পে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এই রাস্তাটির বর্ধিতকরণ প্রকল্প হাতে নিলে, রাস্তার পাশে রেলওয়ের জায়গায় অবৈধভাবে বসবাসকারী ছিন্নমূল জনগণকে উচ্ছেদের ঘোষনা দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ কোন প্রকার পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না করে ৩ হাজার পরিবারকে গৃহহীন করার প্রতিবাদে সভা ও সমাবেশ করেছে ভোক্তভোগী পরিবারগুলো।
রবিবার (৭ নভেম্বর ২০২১)সকাল ১০টায় চৌধুরীবাড়ী-তাতখানা রাস্তার উপর এ প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উচ্ছেদ অভিযান প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম ভ‚ঁইয়ার সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে রাস্তা করবে তাতে আমাদের কোন প্রকার অভিযোগ বা বাঁধা নেই। রাস্তা করার জন্য যে জায়গা প্রয়োজন তা নিযে গেলে চাষাড়া থেকে আদমজী পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বসবাসকারী প্রায় ৩ হাজার পরিবার ছিন্নমূল হয়ে যাবে, অনেক ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাঙ্গা পড়বে, অনেকে বেকার হয়ে যাবে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে, তাতেও আমাদের কোনো প্রকার আপত্তি নাই কিন্তু এখানে রাস্তার দুই পাশে অনেক জায়গা আছে, সরকার রাস্তার জন্য জায়গা নিয়ে গেলেও অনেক জায়গা থাকবে। আমাদের দাবি- আমরা যারা ভাসমান, ভ‚মিহীন ও ছিন্নমূল আছি, রাস্তা করার পর যে জায়গা থাকবে আমাদেরকে সেই জায়গায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।
বক্তরা আরো বলেন, মুজিববর্ষে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন কেউ ছিন্নমূল ভাসমান থাকবে না, সবাই থাকার জায়গা পাবে। দেশরতœ বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে, আমাদের নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের কাছে এবং আমাদের প্রানের মানুষ জনদরদী নাসিক-০৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার কাছে আমাদের প্রাণের দাবী রাস্তার জন্য জায়গা নেওয়ার পর, বাকি জায়গায় আমরা যারা রাস্তার পাশে বসবাসকারী অসহায়, ভ‚মিহীন, ছিন্নমূল আছি তাদের মাঝে সুষম বন্টন করে জায়গা দেওয়া হোক। এই সুষম বন্টন করার জন্য প্রয়োজন বোধে প্রশাসনের মাধ্যমে তালিকা করা হোক। আমরা সরকারকে কর দিয়ে এই জায়গায় বসবাস করতে চাই।
ভোক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ, কিছু চিহ্নিত ভ‚মিদস্যু দুষ্কৃতিকারী রেলওয়ে কল্যাণ সমিতির নাম করে এই সরকারি জায়গা নিজেদের কুক্ষিগত করতে চায়। আমাদেরকে না দিয়ে তারা এই জায়গা দখল করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এই বিষয়ে নাসিক ০৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা বলেন- রাস্তার উন্নয়ন হইতাছে, এটা রেল কর্তৃপক্ষের জায়গা নিয়ম মোতাবেক তারা নিয়া যাইব এই ব্যাপারে আমার বলার কিছু নাই। কিন্তু তাদের যেই সীমানা তা তারা সঠিকভাবে নিয়ম মতো করুক, সরকারি কাজ হইব তাতে আমার অসুবিধা কি? যারা রেলওয়ের জায়গায় এত বছর ধরে থাকে তারাতো জানে, সরকারী জায়গা সরকার প্রয়োজন পড়লে নিয়া যাইব এতে আমার কি করার আছে?