অনলাইন ডেস্ক: করোনা মহামারিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে দ্রুত ও সহজে ছড়ানো ভারতীয় বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। ভ্যারিয়েন্টটির এই ভয়াবহতার পেছনে শক্তি জুগিয়েছে টি-১৯আর (T19R) মিউটেশন। আজ শনিবার এমন বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন বাংলাদেশি অণুবিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের এক ওয়েবিনারে আলোচিত গবেষক ড. বিজন বলেন, ডেল্টা আরো শক্তিশালী হওয়ার পেছনে যেসব মিউটেশন (পর্যায়ক্রমে রূপান্তর) দায়ী, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে টি-১৯আর। মূলত ভ্যারিয়েন্টটি এত শক্তিশালী হওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই মিউটেশনের। এ কারণে ডেল্টা সহজে ও দ্রুত ছড়িয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ডেল্টার সঙ্গে দ্রুত ছড়ানো ফ্লু ভাইরাসের যথেষ্ট মিল পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্লুর জন্য কেউ আক্রান্ত হলে তার গোটা পরিবারে তা সংক্রমিত হচ্ছে। উপসর্গ দেখা যাক বা না যাক, ডেল্টা আক্রান্তদের আশপাশের সবারই এতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা সবাইকে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।
করোনাকালে হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় অবশ্যই কাপড় বা টিস্যু ব্যবহারের তাগিদ দিয়ে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, নিয়মিত মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং টিকা নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য।
সংক্রমিতদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ডেল্টার চিকিৎসায় ব্যবহারের মতো ওষুধ বিশ্ববাজারে রয়েছে। সেগুলোর পাশাপাশি জিংকের সমন্বয়ে বানানো ভিটামিন সি নিতে হবে। এভাবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সফলভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
এ জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জিংকের ভিটামিন সি উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে বলে ওয়েবিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে উল্লেখ করেন ড. বিজন। তিনি বলেন, বাংলাদেশেও এই ভিটামিন তৈরি ও কেনাবেচার অনুমোদন দেয়া উচিত। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা জরুরি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লায়লা পারভীন বানু। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী প্রমুখ।