মামুন সরকার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: যৌতুকের শিকার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সিলিমপুর ইউনিয়নের খারজানা এলাকার এক গৃহবধূ। যৌতুকের দাবিতে স্বামী এমনই পাষণ্ড হয়ে উঠেছেন যে, নিজের দেড় মাসের শিশুকে বিক্রি করে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমনকি যৌতুকের জন্য প্রতিদিন পাষণ্ড স্বামী শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছেন তার স্ত্রীর ওপর। যৌতুকের অমানসিক নির্যাতনের শিকার সে গৃহবধূ বর্তমানে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে গৃহবধুর মা বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় গৃহবধুর স্বামীকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নামে নারী নির্যাতন মামলা করেছে। এখনো কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
ওই গৃহবধূ জানান, দীর্ঘদিন আগে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সিলিমপুর ইউপির খারজানা এলাকার বিশা মিয়ার ছেলে আশরাফের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর তাদের সংসার কিছু দিন ভালো কাটছিলো। কিন্তু সেই সুখ স্থায়ী হলো না। কিছুদিন যেতে না যেতেই সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয় তাদের। এরপর থেকেই বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেয়ার কথা বলে প্রতিনিয়তই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় স্বামী আশরাফ। যৌতুক এনে দিতে না পারায় একপর্যায়ে ছয় মাস আগে তার দেড় মাসের শিশুকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। তাতেও খান্ত হয়নি ওই পাষণ্ড স্বামী।
শুক্রবার গৃহবধূকে আবারো তার বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে। টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় পাষণ্ড স্বামী তার বড় ভাইসহ পরিবারের অন্যান্যরা তাকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালায়।
স্থানীয়রা তাদের বাধা দিলেও তারা কোনো কথা শুনেননি। পরে স্থানীয়রা নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দেখালে চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে এসে গৃহবধূকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মারাত্মক আহত অবস্থায় ভর্তি করেন।
টাঙ্গাইল মডেল থানার ওসি মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।