গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বাংলাদেশের

গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বাংলাদেশের

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:ফিলিস্তিনের গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলের হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ বলেছে, এটি গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “গাজার আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ। এতে প্রধানত নারী ও শিশুসহ শত শত নিরাপরাধ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।
“এই নির্মম হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।”
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের গাজা নগরীর আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রায় ৫০০ জন নিহত হয়েছেন।
প্রায় ১২ দিন ধরে গাজা ভূখণ্ডে চলা ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার মধ্যে হাসপাতালে চালানো এ হামলা সবচেয়ে প্রাণঘাতী একক ঘটনা।
এ হামলার পর থেকে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তবে ইসরায়েল এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ সব সময় ফিলিস্তিনের পাশে আছে। বুধবার রাতে গণভবনে মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসিভুক্ত ১৪টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি বাংলাদেশের এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। এসময় ঢাকায় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত এস ওয়াই রামাদানও উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া হাসপালাতে চিকিৎসাধীনদেরসহ ফিলিস্তিনিদের জন্য জরুরিভিত্তিতে ওষুধসহ চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আলোচনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।
এদিন গাজার হাসপাতালে ‘জঘন্য’ হামলার নিন্দা জানাতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বানও জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ তৈরির জোরালো আহ্বান জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, “এই অপরাধে জড়িতদের অবশ্যই জবাবদিহির মুখোমুখি করতে হবে এবং আরও বেশি প্রাণহানি ঠেকাতে এবং নিরপরাধ মানুষের কষ্ট লাঘবে এ বর্বর যুদ্ধ থামাতেই হবে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, “বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, গাজার বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের চালানো এ যুদ্ধ শুধু অসম ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং গাজায় ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে একযোগে শাস্তি প্রদানের সমান এবং মানবাধিকারের মৌলিক নীতি, আন্তর্জাতিক সব চুক্তি ও কনভেনশনের লঙ্ঘন।”
চলমান সংঘাতের গোড়ার কারণ খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার বলছে, “এটা স্পষ্ট যে, মর্যাদাপূর্ণ জীবনে অস্বীকৃতি ও ইসরায়েলি দখলের মধ্যে বেঁচে থাকা এবং ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড দখল এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে না।
“এ কারণে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্ম-নিয়ন্ত্রণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের কথা বলে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ ও ৩৩৮ নম্বর প্রস্তাবের আলোকে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী ধরে ১৯৬৭ সালের সীমানার আলোকে দুই রাষ্ট্র সমাধানকে সমর্থন করে।”
ফিলিস্তিন প্রশ্নে ‘স্থায়ী সমাধান’ বের করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বানও বিবৃতিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title