তৈয়বুর রহমান, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের কালীগঞ্জে মসজিদের অবকাঠামো বিক্রির ডাক নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও তার ছেলেসহ ৬ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কুমারটেক জামে মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে মসজিদের অবকাঠামো বিক্রিসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, মসজিদের ভেতরেই তিনজনকে মারধর করে রক্তাক্ত আহত করা হয়। ওই ঘটনায় মসজিদে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এ ঘটনায় ৬ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে গুরুতর আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান ও তার ছেলে সফিকুল ইসলামকে ভর্তি করানো হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। আহতরা থানায় অভিযোগ দেয়ার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে কুমারটেক মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক আলী হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কুমারটেক জামে মসজিদের পুরানো স্থাপনা ভেঙ্গে নতুন করে মসজিদ করার কাজ চলছে। স্থানীয় মুসল্লিদের নামাজের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে টিনশেড আকারে মসজিদ তুলে সেখানে নামাজ আদায় হতো। টিনশেড মসজিদ ছোট থাকায় মুসল্লিদের নামাজ পড়তে সমস্যা হতে থাকে। তাই মুসল্লিরা যাতে সুন্দরভাবে নামাজ আদায় করতে পারে সেই জন্য নতুন মসজিদে জুমার নামাজসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সিদ্ধান্ত নেয় মসজিদ পরিচালনা কমিটি। এর মধ্যে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. ইরান মেম্বার কমিটির নেতৃবৃন্দদের না জানিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের আগে টিনশেড মসজিদের অবকাঠামো বিক্রি করা হবে বলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়।
জুমার নামাজের পূর্বে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাধারন সম্পাদকসহ স্থানীয় মুসল্লিরা কমিটির সহ-সভাপতি মো. ইরান মেম্বারকে অবকাঠামো বিক্রির ডাক পরবর্তী সপ্তাহে করার জন্য অনুরোধ করেন। এতে ইরান মেম্বার উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় বকাঝকা করতে থাকে। স্থানীয় চাঁন মিয়ার ছেলে মো.আলাউদ্দিন এর ন্যায় সঙ্গত প্রতিবাদ করলে ইরান মেম্বার তাকে কিল-ঘুষি মারে। তাকে বাঁচাতে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের ছেলে এগিয়ে গেলে ইরান মেম্বার ও ছেলেরা মিলে তাকে মারধর করে মাথা ফাঁটিয়ে দেয়। ছেলেকে বাঁচাতে গেলে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান হামলার শিকার হয়। পরে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে সভাপতির আরেক ছেলে আজিজ, সভাপতির ছোট ভাই মনিরউদ্দিন মনু ও চাঁন মিয়ার বড় ছেলে এনামুল হক আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে গুরুতর আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান ও তার ছেলে সফিকুল ইসলামকে ভর্তি করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ইরান মেম্বার মসজিদের ভেতর যেই ঘটনা ঘটিয়েছে তা ন্যক্কারজনক। সে তার ছেলেরা মিলে আমাকে, আমার দুই ছেলে, ছোট ভাই ও দুই নাতিকে মারধর করেছে। ঘটনার পর ৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদ মিয়া মারামারির ঘটনা ও অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন। এই সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযুক্ত ইরান মেম্বার বলেন, মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদকের কথায় টিনশেড মসজিদের অবকাঠামো বিক্রির বিষয় মাইকে প্রচার করি। এই নিয়ে স্থানীয় কিছু মুসল্লি এর বিরোধী করায় উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।