মতলব প্রতিনিধি : প্রাণঘাতি নভেল করোনা ভাইরাস দাপট দেখাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যাও লাখ লাখ। বিশ্বজুড়ে এমন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের যোগাযোগ এখন বিচ্ছিন্ন প্রায়। বাংলাদেশ একটি জনবহুল এবং ঘনবসতিপূর্ণ দেশ এবং জাতি হিসেবে আমরা অতটা সচেতন নই। সরকারের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র গণজমায়েত এড়িয়ে চলতে বলা হলেও চাঁদপুরের মতলব উত্তরে জমতে বসছে শাহ্ সোলেমান লেংটার মেলা প্রতি বছর চৈত্র মাসের ১৭ তারিখে তার মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৭দিন ব্যাপী ওরশ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং মেলা বসে। ওরশ শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগে ও পর পর্যন্ত মেলা স্থায়ী হয়। মেলায় প্রায় ১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়ে থাকে। এছাড়া প্রতি বছর ভাদ্র মাসে ও সপ্তাহের বৃহস্পতিবার মাজারে ভক্তদের আগমন ঘটে।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সতর্কতা অবলম্বনের অংশ হিসেবে গণজমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সরকারের তরফে ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান স্থগিত করে ঘরোয়া ভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানও স্থগিত করেছে সরকার। এত এত সতর্ক অবস্থানে থাকলেও কেন শাহ সোলেমান লেংটা মেলা কেন বন্ধ হবেনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। এরাই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মতলববাসীর দাবী, জাতীয় স্বার্থে ২০২০ সালে শাহ সোলেমান লেংটার মেলার অনুমতি প্রদান না করতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক’সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, গণজমায়েত বন্ধ করা হলে লেংটার মেলায় তো জমায়েত হবে। মেলায় এক সাথে কয়েশ লক্ষাধিক মানুষের গণজমায়েত। এ অবস্থায় তো ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশিই থাকে। তাহলে কেন মেলা বন্ধ হবে না?
এলাকাবাসী জানান, করোনা ভাইরাসের কথা যখন থেকে শুনেছি তখন থেকেই চিন্তায় পড়ি। দেশের সব বন্ধ হচ্ছে, এত সতর্কতা নেয়া হচ্ছে তাহলে কেন মেলার প্রস্তুতি চলছে? এই রহস্যই বোঝা যাচ্ছে না। আল্লাহ না করুক যদি মেলা অনুষ্ঠিত হয়! আবার এমনও হতে পারে মেলায় আগত লোক থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হলে তখন এ দায় কে নেবে? এদিকে করোনা প্রতিরোধে শাহ সোলেমান লেংটার মেলা বন্ধ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানাচ্ছেন মতলবের সাধারণ মানুষ।
উল্লেখ্য, সোলেমান লেংটার বোনের বাড়ী বদরপুরে মাজারটি অবস্থিত। ১৩২৫ বাংলা সনের ১৭ চৈত্র শাহ্ সূফী সোলেমান লেংটা তার বোনের বাড়ি বদরপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করলে সেখানে কবর দিয়ে মাজার স্থাপন করা হয়। প্রতি বছর চৈত্র মাসের ১৭ তারিখে তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৭দিন ব্যাপী ওরশ্ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং মেলা বসে। ওরশ শুর হওয়ার কয়েক দিন আগে ও পর পর্যন্ত মেলা স্থায়ী হয়। এছাড়া প্রতি বছর ভাদ্র মাসে ও সপ্তাহের বৃহস্পতিবার মাজারে ভক্তদের আগমণ ঘটে। চৈত্র মাসের ১৭ তারিখের মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানসহ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে প্রতিদিন ৫-১০ লক্ষাধিক ভক্ত, আশেকান ও সাধারণ জনগণ আসা-যাওয়া করেন। ওরসকে কেন্দ্র করে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে মেলায় বসে রকমারি দোকান ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভক্তদের আস্তানা।