নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত সময়ে করোনায় আক্রান্ত ২৭১ জন রোগী মারা গেছেন। অথচ এর পরবর্তী এক মাসে, অর্থাৎ ১৫ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১ হাজার ৪৪২ জন মানুষ মারা গেছেন। অর্থাৎ পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় মৃত্যু বেড়েছে ৫ গুণ। গত দুই দিনে করোনায় ১৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ালো।
মৃত্যু বাড়ার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, করোনায় মৃত্যু বৃদ্ধির কারণ চিন্তা-ভাবনা করে বলতে হবে। কেউ বলছেন, অক্সিজেনের অভাব, কেউ বলছেন চিকিৎসার অভাব। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট মৃত্যু বৃদ্ধির কারণ কিনা সেটিও দেখার আছে। তবে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মানাতে হবে।
করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসার অভাব, আইসিইউ শয্যার সংকট ও অক্সিজেনের অভাবে করোনায় মৃত্যু বাড়ছে। দেশের ৩৬ জেলায় এখনো পর্যন্ত করোনার সুচিকিৎসা করা যাচ্ছে না। বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা অনেক সময় পেয়েছি। কিন্তু চিকিৎসাসেবার সক্ষমতা বাড়াতে পারিনি। তিনি বলেন, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট যখন শুরু হলেছিল, তখন তা লুকানো উচিত হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক বলেন, করোনায় মৃত্যু বৃদ্ধির অন্যতম কারণ রোগীদের সচেতন না হওয়া। বিলম্বে রোগীরা হাসপাতালে যায়, পরবর্তী সময়ে নানা জটিলতায় রোগী মারা যায়। তিনি বলেন, করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষার পাশাপাশি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ড. সমীর সাহা বলেন, করোনায় মৃত্যু বৃদ্ধির কারণ নতুন ভ্যারিয়েন্ট কি না সেই ব্যাপারে গবেষণা চলছে। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীর ফুসফুস দ্রুত ড্যামেজ করে দিচ্ছে। গবেষক ডা. সেজুতি সাহা সচেতনতামূলক একটি বক্তব্য দিয়েছেন। সেটি হলো, ‘ভ্যারিয়েন্ট যেটাই হোক, মাস্কে সে ধরা পড়বেই। মাস্ক পরুন। মুখ আর নাক ঢাকুন। নিজে বাঁচুন, অন্যদের বাঁচতে দিন।’