‘ওয়ার্ডভিত্তিক নগর পরিকল্পনা দ্বারা টেকসই নগর গড়া সম্ভব’

নিজস্ব প্রতিবেদক : নগর পরিকল্পনায় পেশাজীবী এবং সাংবাদিকদের বলিষ্ঠ ভূমিকার মাধ্যমে টেকসই নগর বিনির্মাণ ও নগর এলাকার নানা সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব। এ ছাড়া এলাকাভিত্তিক নাগরিক সুবিধাদি তৈরি করা, ওয়ার্ডকেন্দ্রিক উন্নয়ন বৈষম্য দূর করাসহ আলাদা ওয়ার্ডভিত্তিক নগর পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই নগর গড়ে তোলা সম্ভব।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স কর্তৃক আয়োজিত ‘বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২১’-এর পুরস্কর বিতরণী এবং ‘বিআইপি সম্মাননা পদক ২০২১’ অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের উদ্যোগে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২১’-এর পুরস্কর বিতরণী এবং ‘বিআইপি সম্মাননা পদক ২০২১’ শীর্ষক অনুষ্ঠান বিআইপি কার্যালয়ে আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউটের যুগ্ম সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ রাসেল কবির।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান, সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ ড. চৌধুরী মোহাম্মদ যাবের সাদেক, কোষাধ্যক্ষ পরিকল্পনাবিদ তৌফিকুল আলম, বোর্ড সদস্য পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম, পরিকল্পনাবিদ কাজী সালমান হোসেনসহ অন্যান্য বোর্ড সদস্য এবং পরিকল্পনাবিদগণ এবং পুরস্কার বিজয়ী প্রতিযোগীসহ অভিভাবকগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে নগর সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় নগর সাংবাদিকতা ক্যাটাগরিতে প্রথমবারের মতো দুজন সাংবাদিককে সম্মাননা পদক দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগরী এলাকায় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশের নগর এলাকার গণপরিসর, পার্ক-উদ্যানসহ পরিকল্পনার বিভিন্ন শাখায় অবদান রাখায় পরিকল্পনাবিদ সালমা এ শফীকে ‘বিআইপি সম্মাননা পদক’ প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বিশেষ স্বীকৃতি হিসেবে ম্যারাথন দৌড়বিদ পরিকল্পনাবিদ এ বি এম সিদ্দিকুল আবেদীন এবং নগর পরিকল্পনা বিষয়ে গণমাধ্যমে কলাম ও প্রবন্ধ লেখনীর মাধ্যমে পরিকল্পনা বিষয়ক জ্ঞানের বিস্তার ও প্রসার এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধিতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পরিকল্পনাবিদ মো. শাহ জালাল মিশুককে ‘বিআইপি সম্মাননা পদক’ প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস উপলক্ষে শিশু এবং প্রাথমিক বিভাগে চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, পোস্টার, আলোকচিত্র, প্রামাণ্যচিত্র, গবেষণা প্রবন্ধ, পরিকল্পনা উদ্ভাবনী ধারণাসহ নানাবিধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবসের প্রতিপাদ্য ওয়ার্ডভিত্তিক নগর পরিকল্পনার ওপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি মহাপরিকল্পনা, কৌশলগত পরিকল্পনাসহ বড় পরিসরে পরিকল্পনার পাশাপাশি ওয়ার্ড বা মহল্লাভিত্তিক পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ ছাড়া পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রতিটি এলাকায় শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়, খেলার মাঠের সুযোগ সৃষ্টি, স্বাস্থ্য সুবিধাদি নিশ্চিতকরণ সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন। একই সাথে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ওয়ার্ড কমপ্লেক্স নির্মাণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নাগরিক সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণ সম্ভব বলে তিনি মত দেন। সকলের মাঝে পরিকল্পনার ধারণা ছড়িয়ে দিতে পরিকল্পনাবিদদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. আদিল।

সমাপনী বক্তব্যে পরিকল্পিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রত্যককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনসহ ভবিষ্যতে ‘নগর পরিকল্পনা দিবস’ এবং ‘বিআইপি সম্মাননা পদক’ প্রদানের অনুষ্ঠান আরো বড় পরিসরে উদযাপন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title