নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশ এটাই, এখানেই থাকতে হবে। লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে। তাই পরিবেশটা ঠিক রাখতে বলেন। বরিশালের সন্ধ্যা নদী দখলমুক্ত করে প্রতিবেদন না দেওয়ায় ডিসির বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হয়। পরে এই বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে আগামী ১৮ জুন দিন ধার্য করেন আদালত।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিয়া আক্তার। শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রতিবেদনের জন্য আমাদের সময় দিন, যোগাযোগ করি। রিটকারী আইনজীবী বলেন, আদেশ নিয়ে ডিসি এক ধরনের খেলা করে। আদালত বলেন, যা দেখবে তাই তো শিখবে। সচিব যা করে। আদালত অবমাননার হাজার হাজার মামলা পড়ে আছে।
মনজিল মোরসেদ বলেন, আমরা তাহলে কোথায় যাবো? আদালত বলেন, আপনারা কনটেম্পট (আদালত অবমাননা) কোর্টে যান। মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের যদি অস্তিত্ব রাখতে হয় তাহলে সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা (আদালত অবমাননা সংক্রান্ত) সেটা চর্চা করতে হবে। সেটা না করলে আইনের শাসন থাকবে না। জনগণও কোনো বিচার পাবে না। রাষ্ট্র কলাপস করলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এসময় রাষ্ট্রপক্ষের কাছে প্রতিবেদন না দেওয়ার কারণ জানতে চান হাইকোর্ট। সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের সর্বশেষ আরও একটু সময় দেওয়া হোক। এসময় মনজিল মোরসেদ পাশ থেকে বলেন, ৫ বছর চলছে। তখন আদালত বলেন, সাইট টক করছেন কেন? আপনি সিনিয়র আইনজীবী। আপিনও বুঝেন–জানেন দেশের পরিস্থিতি, আদালতের অবস্থা। তারা (রাষ্ট্র পক্ষ) চেষ্টা করে।
সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল শেষবারের মতো সময় চাইলে আদালত বলেন, আপনি যদি একশ বছরও সময় নেন লাভ হবে না। দেশ এটাই, এখানেই থাকতে হবে। লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে। তাই পরিবেশটা ঠিক রাখতে বলেন। ১৮ জুন রাখলাম। ভালো করে বুঝিয়ে বলেন। সম্মানের জায়গাটা ঠিক রাখতে বলবেন। না হলে জবাব দিতে হবে।
আদালত থেকে বের হয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, সন্ধ্যা নদীর ভেতরে গুচ্ছ গ্রাম দখল করা হচ্ছিল মাটি ভরাট করে। বিষয়টি আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। হাইকোর্ট অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। তারা প্রতিবেদন না দেওয়ায় ৫ বছর পর আদালতে আবেদন করেছিলাম। রোববার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ সময় চেয়েছে।
আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, গুচ্ছগ্রামের স্থাপনা অপসারণ করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। যাদেরকে সেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে সরকারি জমিতে অন্য কোথাও বরাদ্দ দিতে নির্দেশনা ছিল। বরিশালের যত নদ নদী আছে, সেগুলো যাতে দখল না হয়, সেজন্য মনিটরিং টিম গঠন করতে বলা হয়েছিল। এছাড়া অবৈধ মাটি ভরাট উচ্ছেদ করতে নির্দেশ ছিল। সেই আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। জেলা প্রশাসক প্রতিবারই সময় নিচ্ছেন।