সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতাঃ
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলার আবেদন করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ূন কবিরের আদালতে ওই মামলার আবেদন করা হয়।
আদালত আর্জি গ্রহণ করে আবদুল্লাহ আল কায়সার ও তাঁর আইনজীবীর বক্তব্য শুনেন। তবে তিনি তাৎক্ষনিক কোন আদেশ দেননি। পরে বিকেলে তিনি এ মামলা খারিজ করে দেন।
ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ২০৩ ধারা অভিযোগটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দিনও আবেদন খারিজ করার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আদালতে দায়ের করা অভিযোগে কায়সার হাসনাত উল্লেখ করেন, ১৯৭০ সালে দাদা মরহুম সাজেদ আলী মোক্তার সাধারণ নির্বাচনে গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক ছিলেন। চাচা মরহুম মোবারক হোসেন দুবার সংসদ সদস্য ছিলেন। আর মা মৃত মমতাজ বেগম জীবদ্দশায় ছিলেন সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। তিনি নিজেও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন। এ অবস্থায় লিয়াকত হোসেন খোকার ‘মিথ্যা ও কুৎসামূলক বক্তব্যে রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক সুনামসহ প্রায় ৫০ কোটি টাকার সমমূল্যের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে।’ যা দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় দন্ডনীয় অপরাধ।
মামলা খারজি হওয়ার আগে বাদির আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন বলেছিলেন, কায়সার সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তিনি ছাড়াও তার দাদা এবং চাচা সংসদ সদস্য ছিলেন। তার বাবা ৪০ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছিলেন এবং মা ছিলেন সমাজসেবিকা। সংসদ সদস্যের এমন মিথ্যা বক্তব্যে পরিবারটির সুনাম নষ্ট হয়েছে। আদালত মামলাটির শুনানি গ্রহণ করেছেন এবং পরবর্তী আদেশ দিবেন।
মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা হয় ২৬ ডিসেম্বর বিকালে সোনারগাঁ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডেও দরপত এলাকার ৪টি মাটির রাস্তা ও ২টি পাকা রাস্তার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, কায়সার সম্পত্তির জন্য তার মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে কোর্টে দাঁড় করিয়েছে। তাই যে সন্তান তুচ্ছ সম্পত্তির জন্য মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে মাকে কোর্টে দাঁড় করাতে পারে, তার কাছ থেকে জনগণ কি আসা করবে? এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই মামলাটির আবেদন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল কায়সার বলেন, এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা মানহানিকর। খোকার বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। সে কারণেই আমি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। তবে আদালতে প্রতি অগাত শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাবো।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Prev Post