নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের দুই রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশের দিনও পূর্ণমাত্রায় শিক্ষক আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি-বিটিএ। রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে শিক্ষক আন্দোলনে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই বলে জানান শিক্ষক নেতারা। আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এখন সবার দাবি।
বিটিএ সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বিটিএ কেন্দ্রীয় কমিটির ৬০ জন শিক্ষক-কর্মচারী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
তবে দুপুর ২টার পর বিগত ১৬ দিনের মতোই হাজারো শিক্ষক লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
শিক্ষক উপস্থিতির বিষয়ে কাওছার আহমেদ জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের শিক্ষক-কর্মচারীরা বাস ভাড়া করে নিয়ে আসেন। তারা এত ভোরে আসেন, যখন সড়কে কোনো যানজট বা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় না। ফলে সমাবেশের দিনও আমাদের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।
রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে শিক্ষক আন্দোলনে কোনো শঙ্কা তৈরি হবে না জানিয়ে কাওছার বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাদের কর্মসূচি পালন করবে। জাতীয়করণ দাবিতে দলীয় কোনো ভাগ নেই, এই দাবি সবার। আমাদের এই ন্যায্য দাবি এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দু’জন উপদেষ্টা (রাজনৈতিক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা) এই দাবির সমর্থন করেছেন।
আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক চাঁপা আপাসহ অন্যান্য সবাই এই দাবিকে যৌক্তিক হিসেবে দেখছেন। ফলে এই কর্মসূচিতে কোনো উসকানি নেই, অন্য কোনো উদ্দেশ্যও নেই। রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি পালন করবে, আমরা আমাদের কর্মসূচি পালণ করব। আমরা সাধারণ শিক্ষক, আমরা সবার। ফলে এই কর্মসূচিতে আমরা কোনো আশঙ্কা দেখছি না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) আয়োজনে ১৭তম দিনের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এদিন প্রেস ক্লাবে গিয়ে সরজমিনে দেখা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। ১৩ জুলাই থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পর এদিন প্রথমবারের মতো শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। প্রতিদিন হাজারো শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবর্তে ১৭তম দিনের কর্মসূচিতে তাদের উপস্থিতি ছিল সর্বোচ্চ এক শ জন। তবে পূর্বের মতোই জাতীকরণের বক্তৃতা, কবিতা, গান ও আবৃত্তির মধ্য দিয়ে কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার দেশের দুই রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর হাইকোর্টে আসার সংবাদ পেয়ে তাঁর সম্মানার্থে নিরাপত্তার কারণে নয় পরিসরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল বিটিএ নেতৃবন্দ। বৃহস্পতিবার সারা দিন ও শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত বিটিএ’র কেন্দ্রীয় কমিটির ৬০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষক নেতারা। শুক্রবার দুপুর ২টার পর আগের মতোই হাজারো শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে এই কর্মসূচি পালিত হবে বলেও জানা তারা।