নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারী করোনা মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বিশ্বজুড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ভয়াবহ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ। আর এতে মারা গেছেন আরও ৭ হাজার ২৩৫ জন। ফলে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ১৬ লাখেরও বেশি মানুষ। আর মোট মৃতের সংখ্যা ছুটছে লাখের দিকে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত মোট মানুষের সংখ্যা ১৬ লাখ ৩ হাজার ৭৫০ জন। এদের মধ্যে শুক্রবার সকালেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪৬৬ জন। চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৬ জন। এখনও এতে আ্রকান্ত রয়েছেন আরও ১১ লাখ ৫১ হাজার ৩৬৩ জন। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার (৪৯ হাজার ১২৭ জন) মানুষের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে করোনায় মৃতের সংখ্যা যে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় লাখ ছাড়িয়ে যাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৫ হাজার ৭৩১ জন। এদের মধ্যে বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৫ হাজার ৭৩১য়ে এসে দাঁড়িয়েছে।
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর তালিকায় এখনও বিশ্বের শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে ইতালি। বৃহস্পতিবার সেখানে মারা গেছে ৬১০ জন এবং নতুন সংক্রমিত হয়েছে ৪ হাজার ২০৪ জন। সবমিলিয়ে সেখানে মারা গেছেন ১৮ হাজার ২৭৯ জন এবং করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৬ জন।
তবে ইটালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মৃত্যুর গ্রাফটা যে ভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছিল, তা অনেকটাই নামিয়ে আনা হয়েছে। সংক্রমণ যাতে আর বাড়তে না পারে তার জন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৬ জন। দেশটিতে মারা গেছে মোট ১৬ হাজার ৬৯৭ জন। ইতালির পর এটাই কোনও দেশের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রামণ কমার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৩৬ জন এবং মারা গেছেন প্রায় ২ হাজারের মতো মানুষ।
করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় এর পরেই রয়েছে ইউরোপের ৪ দেশ স্পেন, ইতালি, জার্মানি ও ফ্রান্স। স্পেনে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৩ হাজার ২২২ জন এবং করোনায় মারা গেছে দেশটির ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।
জার্মানিতে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ২৩৫ জন এবং মারা গেছেন মোট ২ হাজার ৬০৭ জন। আর ফ্রান্সে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯ জন এবং মোট মৃত্যু ১২ হাজার ২১০ জন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল চীন থেকে। কিন্তু এই দেশ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার অনেকটাই কমিয়ে এনেছে দ্রুত। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় অনেকটাই নিচে নেমে এসেছে তারা। এখন দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হচ্ছে ৮১ হাজার ৯০৭ জন। আর মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৩৬ জন।
বৃহস্পতিবার সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মাত্র ২ জন। এর আগে মঙ্গলবার দেশটিতে করোনায় কেউ মারা যায়নি। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর সেদিনই প্রথমবারের মতো মৃত্যুহীন একটি দিন পার করেছে দেশটি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় করোনার কেন্দ্রস্থল হিসাবে পরিচিত উহানের লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। করোনার আঘাত সামলে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে চীন।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইরান। দেশটিতে এই মুহূর্তে মোট ৬৬ হাজার ২২০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন মোট ৪ হাজার ১১০ জন।
এদিকে বাংলাদেশেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনায় মোট ২১ জন মারা গেছেন এবং আরও ৩৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন।।