নিজস্ব প্রতিবেদক: সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে তার পরিবারের করা আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এখন সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবে। এরপর মতামতের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।
এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের বিষয়ে পর্যালোচনা করে সেটির কোনো আইনগত ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, আইনি মতামতে কী বলা হয়েছে, তা পরিস্কার করে বলেননি মন্ত্রী।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে আইনমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ে মতামত পাঠানো হয়েছে। না সূচক আইনি মতের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার ৬টি উপধারা আছে। সেখানে পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন আবার বিবেচনার সুযোগ নেই। তাই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আইনি মতামত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত যাবে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত জানতে পারবেন। তাই মতামতের বিষয়ে এখন জানানো ঠিক হবে না। কারণ এটা গোপনীয় বিষয়, গোপনীয় থাকুক।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা নিয়ে আগের মতামতের ওপর স্ট্যান্ড করছেন কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা স্ট্যান্ড আর সিটিংয়ের কোনো ব্যাপার না। আইনের যে ব্যাখ্যা দিয়েছি তার সঙ্গে কোনোখানেই দেখিনি যে, আমার জাজমেন্টে দ্বিমত আছে। আমার ব্যাখ্যাটাই আমি সঠিক মনে করি।’
গত ১৩ নভেম্বর থেকে ৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির শর্তে বলা আছে, তিনি বিদেশ যেতে বা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে পারবেন না। তবে দেশের মধ্যে যেকোনো হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কয়েকবার প্রত্যাখ্যানের পরেও হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে গত ১১ নভেম্বর তার ভাই শামীম ইস্কান্দার পুনরায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এরপর সেটি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। একই দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে নানা কর্মসুচি অব্যাহত রয়েছে।
অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর দাবিতে সুপ্রিমকোর্টের ১৫জন বিএনপিপন্থী আইনজীবী গত ২৩ নভেম্বর সচিবালয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন। তাদের মতে, আইন দিয়ে সব কিছু বিবেচনা করা যায় না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স, অসুস্থতা ও সামাজিক মর্যাদা বিবেচনা করে সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ওইদিন আইনমন্ত্রী তাদের জানিয়েছিলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরে সংসদে আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার আবেদন নতুন করে বিবেচনা করার কোন সুযোগ নেই।