অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশে এলএনজি টার্মিনাল করতে আগ্রহী রাশিয়া। রাশিয়া-বাংলাদেশ আন্তসরকার কমিশনের অধিবেশনে এ আগ্রহ দেখিয়েছে রাশিয়া। তবে এমন প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ।
কারণ স্বল্পমেয়াদে আমদানি করতে হলে বেশি দাম দিতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে দেশে ডলার সংকট চলছে। এ সময়ে দ্রুত অনেক বেশি ডলার পরিশোধ এবং অর্থ পরিশোধের জটিলতা (কোনো কারেন্সিতে) কাটানো সম্ভব নয় বলে মনে করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে (কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাতসহ অন্যান্য) যেমন দীর্ঘমেয়াদে আমদানি চুক্তি রয়েছে, তেমনটিই করতে চায় ঢাকা।
সূত্রের বরাতে একটি জাতীয় দৈনিকের খবরে এ তথ্য জানানো হয়। ১৩ থেকে ১৫ মার্চ তিন দিনব্যাপী ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত এ কমিশনের অধিবেশন শেষ হয়েছে বুধবার।
এতে রাশিয়ার পক্ষে ছিলেন আন্তসরকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাশিয়া ফেডারেশনের ফেডারেল এজেন্সি ফর ফিশারিজের প্রধান ইলিয়া ভি শেসতাকভ। বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান।
খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া বাংলাদেশে যৌথভাবে সার কারখানা, জ্বালানি পরিশোধন কারখানা এবং চামড়া ও চামড়াজাত কারখানা স্থাপন করতে চায়। এছাড়া প্রাণিসম্পদ এবং কৃষি খাতের জন্য গবেষণাগার তৈরি করতেও আগ্রহ দেখিয়েছে দেশটি। একই সাথে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ স্থাপনে বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার বিষয়েও ইতিবাচক রাশিয়া।
অপরদিকে বাংলাদেশ চায় রাশিয়ায় পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক সুবিধা এবং দেশটিতে সরাসরি পণ্য রপ্তানির সুযোগ। এছাড়া বাংলাদেশ চায় রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি ব্যাংকিং লেনদেন। রাশিয়ার স্পুতনিক ব্যাংক ও বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হওয়ার বিষয় পাঁচ বছর ধরে আলোচনা হলেও অগ্রগতি নেই। এছাড়া মোট ৩৩টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে অধিবেশনে। তবে আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি না থাকায় কোনো বিষয় চূড়ান্ত হয়নি।
অধিবেশনে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। প্রকল্পে রাশিয়া-বাংলাদেশের চুক্তিতে এমন একটি ধারা আছে যেখানে- রাশিয়ার ঠিকাদার দেরি করলে বাংলাদেশকে জরিমানা দিতে হয়। চুক্তির সেই ধারা সংশোধনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে কোনো সিদ্ধন্ত হয়নি। ওই ধারার কারণে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা জরিমানা দিয়েছে।
কমিশনের প্রথম অধিবেশনে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে শুধু পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভর করলেই চলবে না, বাংলাদেশের জন্য একটা বড় গন্তব্যস্থল হতে পারে রাশিয়া। এ বিষয়ে দুই পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। তবে রাশিয়া যেহেতু বড় দেশ, তাই বড় ছাড় দেবে রাশিয়া। আমরা সেটাই চাই, সেভাবেই আলোচনা এগিয়ে নিতে হবে।