বগুড়া প্রতিনিধি: ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য বন্ধুকে কৌশলে কোমলপানীয়ের মধ্যে ঘুমের ঔষধ খাওয়াইয়ে অজ্ঞান করে উপূর্যপূরি ছুরিকাঘাত করে খুন করে। এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নিজেই ৯৯৯ ফোন করে বন্ধু’র ইজিবাইক ছিনতাই হয়েছে খবর দেয়। এ ঘটনায় সন্দেহাতীত খুনি বন্ধু রাব্বী(২২)কে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে বগুড়ার শেরপুরের সুঘাট ইউনিয়নের জোরগাছা এলাকায় ঘটেছে ।
গ্রেফতাকৃত রাব্বির দেয়া তথ্যমতে ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার শেরপুরে জোরগাছা এলাকার ধান ক্ষেতের ভিতর থেকে ইজিবাইক চালক মিনহাজ শেখ (২২) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় বগুড়া পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞা (বিপিএম বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ, শেরপুর সার্কেল মো. গাজিউর রহমান, জেলা ডিবি পুলিশের ইনচার্জ আসলাম হোসেন, শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
থানা পুলিশের তথ্যমতে জানা যায়, বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বিশ^হরিগাছা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে রাব্বি একই গ্রামের তার বন্ধু মোজাদ্দারের ছেলে মিনহাজের ইজিবাইক নিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে বেড়ানোর কথা বলে শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের আওলাকান্দি গ্রামে আসে। পথিমধ্যে এক দোকান থেকে কোমল পানীয় স্পিড কিনে তার মধ্যে ১০ টি ঘুমের ঔষধ মিষিয়ে বন্ধু মিনহাজকে খাওয়ানো হয়। এতে মিনহাজ অচেতন হয়ে পরলে এই সুযোগে রাব্বি বন্ধু মিনহাজকে উপর্যিপুরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এমনকি লাশ যেন কেউ না চিনতে পারে সেজন্য ধারালো চাকু দিয়ে মুখের চামড়া কেটে ফেলে। পরবর্তীতে হত্যাকান্ডের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে রাব্বি ৯৯৯ এ ফোন করে বলে যে, ছিনতাইকারীরা আমার বন্ধু মিনহাজকে খুন করে তার ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। আমি বাধা দিলে আমাকে চাকু মেরে ফেলে রেখে গেছে। ৯৯৯ থেকে তাকে থানায় গিয়ে জিডি করতে বললে রাব্বি থানায় যায়। পুলিশ রাব্বিকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে সত্য ঘটনা বলে দেয়। তখন রাব্বীর এলোমেলো কথায় সন্দেহ হলে শেরপুর পুলিশ আটক করে। এতে গ্রেফতারকৃত রাব্বীকে শেরপুর সার্কেল অফিসের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার স্বীকারোক্তিমুলক তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়া পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞা (বিপিএম বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ, শেরপুর সার্কেল মো. গাজিউর রহমান, জেলা ডিবি পুলিশের ইনচার্জ আসলাম হোসেন, শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেরপুর সার্কেল মো. গাজিউর রহমান বলেন, খুনি রাব্বির কোন আয় রোজগার ছিলনা। তাই সে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পরে। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনা করে তার বন্ধু মিনহাজের ইজিবাইক ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে তাকে সুঘাট এলাকায় নিয়ে এসে খুন। লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। গ্রেফতার রাব্বির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে গ্রেফতারকৃত রাব্বী এর আগেও হত্যাকান্ডের মতো অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে বলে তথ্য রয়েছে।