বগুড়ায় ইউএনও-এসিল্যান্ড, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়া প্রতিনিধি:ব্যক্তি মালিকদের জমি দখল নিয়ে সেখানে গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণের অভিযোগে বগুড়ার ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), এ্যাসিল্যান্ড ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
এ মামলার অন্য আসামীরা হলেন, ধুনট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, গোপালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোপালনগর ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভুমি কর্মকর্তা। গত ২৬ জানুয়ারি আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ১৪ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে বিবাদীগণকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে।
বাদি পক্ষের আইনজীবি টি এম খোদা বকস এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের গজিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে আকবর আলী, তার ভাই মোজাফ্ফর আলী ও মা রহিমা খাতুন সহ একই পরিবারের ছয়জন এ মামলার বাদী হয়েছেন ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গোপালনগর ইউনিয়নের গজিয়াবাড়ি গ্রামের আকবর আলী ও তার পরিবারের লোকজন কমপক্ষে শত বছর ধরে গজিয়াবাড়ি মৌজার ( দাগ নম্বর ৯৫১, জে.এল.নম্বর ৮২, সি.এস খতিয়ান নম্বর ১৩৮, এম.আর. খতিয়ান নম্বর ১৮১, ডি.পি খতিয়ান নম্বর ৮৭৯) ২৫ শতক জমি ভোগ দখল করছেন। এরমধ্যে ১৩ শতক জমি দখল নিয়ে গৃহহীন ৮টি পরিবারে জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মান করেছেন উপজেলা প্রশাসন। গত ২০ জানুয়ারী এসব ঘরের উদ্বোধন করা হয়েছে।
জমির প্রকৃত মালিক দাবিদার আকবর আলী, মোজফ্ফর আলী ও রহিমা খাতুন সহ পরিবারের লোকজন বলেন, জমিটি আমাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি। দীর্ঘ এক-দেড়শ’ বছর ধরে আমরা এই জমি ভোগদখল করে আসছি। হঠাৎ করে ইউএনও, চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা এসে বলেন এই জমি খাস খতিয়ানের। এই বলে তারা জমিতে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আমরা কাগজপত্র দেখাতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের কাগজ দেখার প্রয়োজন নেই। আদালতে গিয়ে দেখান। তখন আমরা উপায় না পেয়ে ২৬ জানুয়ারী আদালতে মামলা করি (নম্বর ২২/২০২১)। আদালাত আমাদের কাগজপত্র দেখে বিবাদিগণের বিরুদ্ধে কারণে দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাই, ইয়ার আলী, মেহের আলী, দুদু মিয়া সহ বেশ কিছু বয়স্ক মানুষের সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা সাক্ষী, ওই জমি একশ’ বছরের বেশি সময় ধরে আকবর আলীর বাপদাদারা ভোগদখল করে আসছে। হঠাৎ সরকারের লোকজন কোনো কথা না শুনেই এখনে জোর করে ঘরগুলো নির্মাণ করেছে।
এ বিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, বাদি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল নিয়ে ভোগদখল করছিল। তারা এ জমির কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ কারণে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তারা মিথ্যা আরজি দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছে। আদালতের দেয়া শোকজ নোটিশের জবাব নির্ধারিত সময়েই দাখিল করা হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title