প্রকৃতির সন্তুষ্টি ও মানব জাতিকে বাঁচাতে বগুড়ায় স¤প্রদায়ের কারাম উৎসব

দীপক সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি: ভাদ্রের শেষ দিনে তালপাকা রোদও বেশ রুক্ষ স্বভাবের ছিল দিনব্যাপী, তবে দিনের শেষে সন্ধ্যা নামলেও ভ্যাপসা গরমের অস্থিরতা ছিল বরাবই। প্রত্যন্ত অ লে সন্ধ্যা নামলেই প্রাকৃতিক নিয়মে ঘুটঘুটে অন্ধকার হলেও কালের পরিবর্তনে এসব অ লে এখন বৈদ্যুতিক আলোও পৌছেছে। চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শেষে রীতি অনুযায়ী একাদশি তিথিতে কারাম পূজা উৎসব করে থাকেন আদিবাসী সম্প্রদায়েরা। তবে প্রকৃতির সন্তুষ্টি ও মানব জাতিকে বাঁচাতে এ উৎসব পালন করা হয়। আবার ‘‘ভাইয়াকে কারাম, বেহিনকে ধর’’ যার বাংলা অর্থ ভাইদের কর্ম আর বোনদের ধর্ম পালন করা বলেও জানিয়েছেন আদিবাসী সম্প্রদায়েরা। আলো ও আধারের রাতেএ অনুষ্ঠানে শুরুতে হলুদ শাড়ী আর খোপায় গাঁদা ফুল, রকমারি সাজে বাদ্যের তালে তালে নেচে-গেয়ে পালন করলো তাদের ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব। এমনই এক উৎসব বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বগুড়ার উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী গোরতা গ্রামে হয়। আদিবাসী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা সরেনে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শেরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সাবরিনা সারমিন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: মো. রায়হান পিএএ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ভাদ্র মাসের শেষে রীতি অনুযায়ী একাদশিতে বোনেরা ভাইদের মঙ্গল কামনায় উপবাস থাকেন। এরপর সন্ধ্যায় পূজা মÐপে স্থাপন করা হয় কারাম গাছ। তারপর মধ্যরাত পর্যন্ত চলে পূজা অর্চনা। পূজা শেষে নারী পুরুষ বাদ্যের তালে তালে নেচে গেয়ে পালন করেন তাদের এই কারাম উৎসব।

অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির নেতা কান্ত মাহাতো বলেন, সারাদেশের আদিবাসীরা এই উৎসবে আমরা একদিকে যেমন ঈশ্বরের কাছে দেশের সুখ সমৃদ্ধি কামনা করি, অন্যদিকে অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে শক্তি অর্জন করি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি সত্তাগুলির নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক রয়েছে। কারাম উৎসব আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব। এগুলো ঐতিয্যগুলো টিকিয়ে রাখতে নিয়মিত আয়োজন করা জরুরী।
এ অ লে প্রতিবছর ঘরোয়াভাবে কারাম পূজা উদযাপন করা হত কিন্তু এবার প্রথমবারের মতো সম্মিলিতভাবে আয়োজন করেন আদিবাসীরা। এ উৎসব উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে আসে হাজারো দর্শনার্থী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title