ঝিমিয়ে পড়েছে লালমনিরহাট ছাত্রলীগ নেতৃত্বে বিবাহিত, চাকরিজীবী ও মামলার আসামি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: বিবাহিত, চাকরিজীবী, মামলার আসামি, ব্যবসায়ী ও জনপ্রতিনিধি নেতাদের নেতৃত্বে ঝিমিয়ে পড়েছে লালমনিরহাট ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও সংগঠনটির দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই। অনেকেই টেন্ডারবাজি অনেকে ঘর গোছাতেই ব্যস্ত।
জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি কোনো কর্মী সভার আয়োজন করতে পারেনি। আর ছাত্রলীগের সভাপতি বক্করের বিরুদ্ধেও রয়েছে টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগ। তাই জেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী নেতারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলেন, “জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ইয়াকুব বিবাহিত, আর সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্কর নির্বাচিত সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ায় তিনি একজন সরকারি ভাতাভুক্ত জনপ্রতিনিধি। তারা এখন ঘর গোছাতেই ব্যস্ত। জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সজল আহমেদ হত্যা মামলার অভিযোগ, সহ সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম মারুফ মাদক মামলার অভিযোগ। স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাবেদ হোসেন বক্কর ও ইয়াকুব আলী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই জেলা ছাত্রলীগের এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ৮বছর পেরিয়ে গেলেও ছাত্রলীগের পৌর কমিটি গঠন হয়নি। পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মোহন বিবাহিত। সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি এনামূল সাঈদ সদ্য বিবাহিত। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বক্কর ও সম্পাদক ইয়াকুব-এর দ্ব›েদ্বর কারণে দীর্ঘদিন থেকেলালমনিহাট সরকারি কলেজ শাখার কোন কমিটি হয়নি। হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম ও পাটগ্রাম পৌর ছাত্রলীগের ও কমিটির মেয়াদ শেষ। আদিতমারি উপজেলা ছাত্রলীগেরও মেয়াদ শেষ। সভাপতি কামাল হোসেন বিবাহিত ও কলেজের শিক্ষক। সাধারণ সম্পাদক মাইদুল বাবুর বয়স শেষ এবং বিবাহিত। কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও এ নিয়ে জেলার নেতাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।
অভিযোগ উঠেছে এসব নেতাদের কাছ থেকে অর্থ নৈতিক সুবিধা নিয়ে দিনের পর দিন কমিটি ঝুলিয়ে রেখে নতুন কমিটি দেয়া হচ্ছে না। নতুন কমিটি না দেওয়ার ফলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। অনেক ডেডিকেটেড কর্মী ঝরে যাচ্ছে। যা দলের জন্য ক্ষতির কারণ। তাই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার দাবী উঠেছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ সভাডতি জাবেদ হোসেন বক্করের সাথে কথা বলতে ফোন দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

এদিকে সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্করের টেন্ডার নিয়ে বাক বিতন্ডা ও হট্টগোলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় জেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভিডিওতে হাসপাতালের একটি কাজের টেন্ডার ফেলা নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বক্কর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুল্লাহ বাহার রোহিদের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা নির্ধারিত সময়ের পর টেন্ডার ফেলতে গিয়ে ব্যাপক হট্টগোল, কর্তৃপক্ষকে গালিগালাজ ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করতে দেখা যায়। ওই ভিডিওটি এখন নেট দুনিয়ায় ঘুরছে। ওই হট্টগোলের সময় পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফ আহমেদ মোহন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রোহিত, ছাত্রলীগ নেতা রিদানসহ অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্কর বলেন, আমার নিজের কোনো লাইসেন্স নেই। তবে আমার বাবা ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বাবাকেই নানাভাবে তার ঠিকাদারি কাজে বাধাগ্রস্ত করছেন জেনে আমরা এসেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্রলীগ নেতা বক্করের বাবার নামে ‘এম.এস.আর’ এর দরপত্রের কোন লাইসেন্স নেই।

উল্লেখ্য, লালমনিরহাট জেলা সদরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ২০২০-২১ অর্থবছরের এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের নিমিত্তে গত বছরের ২ডিসেম্বর দরপত্র আহŸান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দরপত্র গ্রহণের শেষ সময় ছিল ৩জানুয়ারি সকাল ১১টা পর্যন্ত।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title