জামালপুরে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ভুয়া পরিচয়ধারীদের নাম অন্তর্ভুক্তি

 

জামালপুরে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ভুয়া পরিচয়ধারীদের নাম অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, তালিকায় স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব বর্জনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠিও দিয়েছেন জেলার তিন মুক্তিযোদ্ধা।

জামালপুরের চকবেলতৈল দড়িহামিদপুরের মৃত মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলে মো. ফসিউল আলম। যিনি একজন রাজাকার হয়েও ৯নং রানাগাছা ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়েছেন। যার মুক্তিবার্তা নং ০১১৩০১০২০০, গেজেট নং ২৪৪, সনদ নং ম১১৫৯৩, জাতীয় তালিকা নং ৬১, বাংলাদেশ গেজেট মে ২৩, ২০০৫ এর নাম্বার ২৪৪। তার তিন মেয়ের মধ্যে দুইজনই বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি করছেন।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের নামও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায়। যা শুধু অসম্মানজনক নয়, স্বাধীন দেশের জন্য কলঙ্কও বটে।

বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব বর্জনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া অভিযোগের ওই চিঠিতে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া পরিচয়ধারীদের দৌরাত্মে কোনঠাসা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা। এসব ভুয়া পরিচয়ধারীদের অনেকেই পাচ্ছেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। আর এর প্রতিবাদ জানাতেই তাদের এই সিদ্ধান্ত।

মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজুল হক বলেন, অমুক্তিযোদ্ধারা বীর খেতাব পায়, একারণে আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এগুলো বর্জন করেছি।

মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম আজাদ বলেন, আমি একদিন অফিসারকে বলছিলাম যে আপনি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেন, এটা অত্যন্ত দুখঃজনক, লজ্জার বিষয়। তিনি বলেন, তাদের গেজেট আছে, তাদের সার্টিফিকেট আছে, তাদের না দিলে তো আমাদের চাকরি থাকবে না।

মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল হোসেন বলেন, প্রেসার দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হবে আর সেই মুক্তিযোদ্ধারা আবার রাষ্ট্রীয় সম্মান পাবে, আহত ভাতা খাবে, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে এটা আমার বিবেক কখনো মেনে নেয় না।

জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে ভুয়াদের নাম বাদ দিতে মন্ত্রণালয়ে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। গত ১৫ জুনের মধ্যে যা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে। কিন্তু এখনও তা দেখেনি আলোর মুখ।

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ১১৩ জন যারা ইতিমধ্যে ভাতা প্রাপ্ত, সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা তাঁরা পাচ্ছে। তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে এসেছে যাচাই বাছাই করে প্রেরণ করার জন্য। এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ১৬ই ডিসেম্বরের পরপরই আমরা এটা পাঠাবো।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

Title